চট্টগ্রাম বিভাগের ১০টি সেরা ট্যুরিস্ট স্পট | বিস্তারিত ভ্রমণ গাইড | Chittagong Top 10 Tourist Spot

চট্টগ্রাম বিভাগ শুধু পাহাড়-সমুদ্রের সৌন্দর্যেই স্থান নয়, বরং প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য, ঐতিহাসিক নিদর্শন এবং পর্যটকদের জন্য অসাধারণ অভিজ্ঞতায় ভরপুর একটি অঞ্চল। কক্সবাজারের বিস্তীর্ণ সমুদ্র সৈকত থেকে শুরু করে খৈয়াছড়ার ঝর্ণা, রাঙ্গামাটির লেক কিংবা চন্দ্রনাথ পাহাড় - প্রতিটি গন্তব্যই যেন একেকটি ভ্রমণপিপাসুর স্বপ্নের ঠিকানা।
 
 
চট্টগ্রাম বিভাগের ১০টি সেরা ট্যুরিস্ট স্পট
 

এই পোস্টে আমরা তুলে ধরবো চট্টগ্রাম বিভাগের জনপ্রিয় ১০টি পর্যটন কেন্দ্র, কীভাবে যাবেন, কোথায় খাবেন এবং কোথায় থাকবেন, সব কিছু বিস্তারিতভাবে jজানতে পারবেন।  

১. কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত


কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বিশ্বের দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্রসৈকত, যেখানে বঙ্গোপসাগরের নীল জলরাশি আর সোনালি বালুকাবেলা একত্রে সৃষ্টি করে অপূর্ব সৌন্দর্য। ঢাকা থেকে কক্সবাজার ভ্রমণ করতে চাইলে নিচের তথ্যগুলো আপনার জন্য সহায়ক হবে। কক্সবাজারের মূল আকর্ষণ লাবণী পয়েন্ট, যেখানে প্রতিদিন হাজারো পর্যটক সমুদ্রের ঢেউ উপভোগ করতে আসেন। এছাড়া হিমছড়ি, ইনানী, এবং মেরিন ড্রাইভ সড়কও দর্শনার্থীদের জন্য বিশেষ আকর্ষণীয় স্থান।
 
 
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ভ্রমন
 
 
ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়ার উপায়-

বাসে ভ্রমণ
রুট: ঢাকা - কক্সবাজার
সময়: প্রায় ১০ - ১২ ঘণ্টা
ভাড়া: নন-এসি বাসে ৯০০- ১,১০০ টাকা; এসি বাসে ১,২০০ - ২,৫০০ টাকা
বাস সার্ভিস: গ্রীন লাইন, সৌদিয়া, শ্যামলী, হানিফ ইত্যাদি
বাসের কাউন্টার নাম্বার পেতে ভিজিট করুন - যাত্রিসেবা ডটকমে

ট্রেনে ভ্রমণ
রুট: ঢাকা - চট্টগ্রাম - কক্সবাজার
সময়: ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ট্রেনে ৬ - ৭ ঘণ্টা। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার বাসে ৩ - ৪ ঘণ্টা।
ভাড়া: শোভন (নন-এসি): ৪৫০ - ৫৫০ টাকা। এসি বার্থ। ১,৭২৫ টাকা।

বিমানে ভ্রমণ
রুট: ঢাকা - কক্সবাজার
সময়: প্রায় ১ ঘণ্টা
ভাড়া: ৩,৫০০ - ৪,২০০ টাকা (বিমান সংস্থা ও প্রমোশন অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে)

কক্সবাজারে দর্শনীয় স্থানসমূহ
লাবণী পয়েন্ট: মূল সমুদ্র সৈকত, যেখানে সাগরের ঢেউ উপভোগ করা যায়।
হিমছড়ি ও ইনানী বিচ: প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর সৈকত।
মেরিন ড্রাইভ সড়ক: কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক, যা সমুদ্রের পাশ দিয়ে গেছে।
বার্মিজ মার্কেট: স্থানীয় ও বিদেশি পণ্যের বাজার, যেখানে বার্মিজ হস্তশিল্প ও পোশাক পাওয়া যায়।

হোটেল ও আবাসন
কক্সবাজারে বিভিন্ন মানের হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। অফ-পিক সিজনে আগাম বুকিং করলে সাশ্রয়ী মূল্যে আবাসন পাওয়া যায়।

খাবার ও রেস্টুরেন্ট
কক্সবাজারে সীফুডের জন্য সুগন্ধা পয়েন্টের রেস্টুরেন্ট গুলো জনপ্রিয়। এছাড়া বার্মিজ খাবারের জন্য বার্মিজ মার্কেটের আশেপাশে বিভিন্ন খাবারের দোকান রয়েছে।

ভ্রমণ পরামর্শ
সাগরে নামার আগে জোয়ার-ভাটার সময়সূচি জেনে নিন।
লাইফগার্ডের নির্দেশনা মেনে চলুন।
পরিবেশ রক্ষায় সৈকতে প্লাস্টিক বা বর্জ্য ফেলবেন না।

কক্সবাজার ভ্রমণ আপনার জন্য একটি সুন্দর অভিজ্ঞতা হতে পারে। সঠিক পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নিয়ে ভ্রমণ উপভোগ করুন।


২. পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত


চট্টগ্রাম শহরের নিকটেই অবস্থিত পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন স্থান। শহর থেকে মাত্র ১৪ কিমি দূরে হওয়ায় এটি চট্টগ্রামবাসী ও দূর-দূরান্তের ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে সমুদ্র উপভোগের সেরা জায়গা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি এখানে রয়েছে ওয়াকওয়ে, বসার বেঞ্চ, খাবার দোকান, ট্রলার রাইড ও ঘোড়ার গাড়ি যা একে করে তুলেছে এক প্রাণবন্ত সাগরপাড়।
 
 
পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত
 

ঢাকা থেকে পতেঙ্গা সৈকতে যাওয়ার উপায়-

বাসে ভ্রমণ
ঢাকা টু চট্টগ্রাম সময়: ৮ - ১০ ঘণ্টা ভাড়া:  
নন-এসি: ৮০০ - ১১০০ টাকা  এসি: ১২০০ - ২০০০ টাকা  
জনপ্রিয় বাস: হানিফ, শ্যামলী, এস আলম, সৌদিয়া
বাসের কাউন্টার নাম্বার পেতে ভিজিট করুন - vromonlover.xyz

ট্রেনে ভ্রমণ
সময়: ৬ - ৭ ঘণ্টা
ট্রেনের ভাড়া
শোভন: ৩৮০ - ৫০০ টাকা 
এসি সিট/বার্থ: ১২০০ - ১৭০০ টাকা 
স্টেশন: ঢাকা - চট্টগ্রাম রেলস্টেশন

বিমানে ভ্রমণ
সময়: মাত্র ৫০ - ৬০ মিনিট
ভাড়া: ৩৫০০ - ৫০০০ টাকা (ভিন্ন হতে পারে)
বিমান নামবে: চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর, যা পতেঙ্গার খুব কাছেই

পতেঙ্গা পৌঁছে কীভাবে সৈকতে যাবেন?
চট্টগ্রাম শহর বা রেলস্টেশন থেকে:
সিএনজি বা ট্যাক্সি: ৩০ - ৪০ মিনিট
বাস বা মাইক্রোবাস ভাড়া করে গ্রুপে গেলে সহজ

পতেঙ্গার আকর্ষণ
সাগরের ঢেউ উপভোগ
সূর্যাস্ত দেখার অসাধারণ দৃশ্য
বোট রাইড ও ঘোড়ার গাড়ি
স্ট্রিট ফুড, বার-বি-কিউ

থাকার ব্যবস্থা
চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন এলাকায় হোটেল ও গেস্ট হাউস রয়েছে:
হোটেল আগ্রাবাদ
হোটেল দ্য কোস্টাল ভিউ
রিসোর্ট প্যাসিফিক ইত্যাদি

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত যেন এক দিনের ভ্রমণে সমুদ্র ভালোবাসার পূর্ণতা। কম সময়ে, কম খরচে ঢাকার ব্যস্ততা থেকে মুক্তি পেতে চাইলে এটি হতে পারে আপনার পরবর্তী গন্তব্য। ঘুরে আসুন, ছবি তুলুন, প্রাণ ভরে উপভোগ করুন পতেঙ্গা সৈকতের ঢেউ!


৩. ফয়েজ লেক


চট্টগ্রাম শহরের কোল ঘেঁষে পাহাড় আর লেকের অপূর্ব মিলনস্থল ফয়েজ লেক (Foy's Lake) এক অসাধারণ প্রাকৃতিক ও বিনোদনকেন্দ্র। ১৯২৪ সালে তৈরি এই লেকটি এখন একটি জনপ্রিয় ট্যুরিস্ট স্পট, ফয়েজ লেক রয়েছে- নৌকা ভ্রমণ, পাহাড়ি ট্র্যাক,  Amusement Park (Sea World), ঝর্ণার মতো সৌন্দর্য আর শান্ত পরিবেশ।
 
 
ফয়েজ লেক
 

ঢাকা থেকে ফয়েজ লেক যাওয়ার উপায়-

বাসে ভ্রমণ 
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম
সময়: ৮ - ১০ ঘণ্টা
ভাড়া:  
নন-এসি: ৮০০ - ১১০০ টাকা  
এসি: ১২০০ - ২০০০ টাকা  
বাস সার্ভিস: শ্যামলী, হানিফ, ইউনিক, সৌদিয়া, এস আলম
বাসের কাউন্টার নাম্বার পেতে ভিজিট করুন - www.zatriseba.com

ট্রেনে ভ্রমণ
সময়: ৬ - ৭ ঘণ্টা
ভাড়া:  
শোভন: ৩৮০ - ৫০০ টাকা  
এসি বার্থ: ১২০০ - ১৭০০ টাকা
স্টেশন: চট্টগ্রাম রেলস্টেশন - সেখান থেকে সিএনজি/বাসে ফয়েজ লেক (প্রায় ১৫ - ২০ মিনিট)

বিমানে ভ্রমণ
সময়: ৫০ - ৬০ মিনিট
ভাড়া: ৩৫০০ - ৫০০০ টাকা (এয়ারলাইনের অফার অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে)

ফয়েজ লেকের আকর্ষণ
নৌকা রাইড: পাহাড় ঘেরা লেকের উপর দিয়ে নৌকাভ্রমণের অভিজ্ঞতা সত্যিই অনন্য। 
Sea World Amusement Park: শিশু ও বড়দের জন্য নানা ধরনের রাইড, সুইমিং পুল। 
পাহাড়ি দৃশ্য ও ট্র্যাকিং: প্রকৃতির মাঝে হাঁটার এক চমৎকার সুযোগ। 
ফটোগ্রাফি স্পট: ইনস্টাগ্রাম-যোগ্য লোকেশন!

থাকার ব্যবস্থা
ফয়েজ লেক রিসোর্ট
চট্টগ্রাম শহরের হোটেল (Hotel Agrabad, Well Park, Peninsula)

ফয়েজ লেক কেবল একটি লেক নয়, বরং শহরের কোলাহল থেকে মুক্তি নিয়ে প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যাওয়ার এক সুন্দর জায়গা। ঢাকার ব্যস্ততা থেকে একদিনের ছোট ভ্রমণ বা উইকেন্ড গেটওয়ের জন্য এটি হতে পারে দারুণ একটি চয়েস। চলুন, পাহাড় আর লেকের এক স্বপ্নময় ভ্রমণে ঘুরে আসি ফয়েজ লেক থেকে!


৪. চন্দ্রনাথ পাহাড় ও মন্দির


চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অবস্থিত চন্দ্রনাথ পাহাড় ও মন্দির একটি জনপ্রিয় তীর্থস্থান এবং ট্রেকিংপ্রেমীদের জন্য আকর্ষণীয় গন্তব্য। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পাহাড়ি পথ, এবং ঐতিহাসিক মন্দিরের সমন্বয়ে এটি ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা প্রদান করে। চন্দ্রনাথ পাহাড় সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১১৫২ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। পাহাড়ের চূড়ায় রয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র চন্দ্রনাথ মন্দির, যা শিব মন্দির হিসেবে পরিচিত। পাহাড়ে ওঠার পথে বিরুপাক্ষ মন্দির এবং ছোট ঝর্ণা দেখা যায়, যা ভ্রমণকে আরও মনোমুগ্ধকর করে তোলে। পাহাড়ের চূড়া থেকে বঙ্গোপসাগরের অসাধারণ দৃশ্য দেখা যায়, যা ভ্রমণকারীদের মুগ্ধ করে।
 
 
চন্দ্রনাথ পাহাড় ও মন্দির
 

ঢাকা থেকে চন্দ্রনাথ পাহাড়ে যাওয়ার উপায়-

বাসে ভ্রমণ
স্টার্টিং পয়েন্ট: ঢাকার সায়েদাবাদ, ফকিরাপুল, মহাখালী বাসস্ট্যান্ড।
গন্তব্য: সীতাকুণ্ড বাজার।
ভাড়া: নন-এসি: ৪২০ - ৪৮০ টাকা; এসি: ৮০০ - ১১০০ টাকা।
সময়: প্রায় ৫ - ৬ ঘণ্টা।
বাস সার্ভিস: শ্যামলী, হানিফ, এস আলম, সৌদিয়া, ইউনিক, সোহাগ, গ্রিন লাইন ইত্যাদি।
বাস কাউন্টার নাম্বার পেতে ভিজিট করুন - যাত্রিসেবা ডটকম

ট্রেনে ভ্রমণ
ট্রেন: ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর ট্রেন (যেমন: মহানগর এক্সপ্রেস, তুর্না এক্সপ্রেস)।
স্টেশন: ফেনী স্টেশনে নেমে, রিকশা/অটোতে ফেনী মহিপাল বাস স্ট্যান্ডে যান।
সেখান থেকে: লোকাল বাসে ৫০ - ৮০ টাকায় সীতাকুণ্ড।
ভাড়া: শোভন চেয়ার: ২৬৫ টাকা; এসি: ৭৯০ টাকা।
ট্রেনের সময়সূচী জানতে ভিজিট করুন zatriseba.com

চট্টগ্রাম থেকে সীতাকুণ্ড
বাস: চট্টগ্রামের অলংকার, এ কে খান মোড় বা কদমতলী থেকে লোকাল বাসে ৪০ - ৮০ টাকায় সীতাকুণ্ড।
সিএনজি: রিজার্ভ করলে ভাড়া পড়বে ৩০০ - ৪০০ টাকা।

চন্দ্রনাথ পাহাড়ে ট্রেকিং গাইড
পথ: সীতাকুণ্ড বাজার থেকে রিকশা বা সিএনজিতে চন্দ্রনাথ পাহাড়ের পাদদেশে পৌঁছান।
আরোহন: প্রায় ২২০০ সিঁড়ি বেয়ে চূড়ায় উঠতে হয়; সময় লাগে প্রায় ১.৫ ঘণ্টা।
পথের বৈশিষ্ট্য: বাম পাশের পাহাড়ি পথ দিয়ে ওঠা সহজ; ডান পাশের সিঁড়ি পথে নামা সুবিধাজনক।
সতর্কতা: পাহাড়ি পথ দুর্গম ও পিচ্ছিল হতে পারে; ট্রেকিং স্যু পরা এবং সাবধানে চলাফেরা করা জরুরি।

থাকার ও খাবারের ব্যবস্থা
থাকার জন্য: সীতাকুণ্ডে হোটেল সৌদিয়া, সাইমুন আবাসিক ইত্যাদি মাঝারি মানের হোটেল রয়েছে। তবে ভালো মানের থাকার জন্য চট্টগ্রাম শহরের হোটেলগুলো বিবেচনা করতে পারেন।
খাবারের জন্য: সীতাকুণ্ডে সৌদিয়া রেস্টুরেন্ট, আপন রেস্টুরেন্ট এবং আল আমিন রেস্টুরেন্ট উল্লেখযোগ্য।

ভ্রমণ পরামর্শ
সকাল সকাল যাত্রা শুরু করুন যাতে দিনভর ভ্রমণ উপভোগ করতে পারেন।
পর্যাপ্ত পানি, হালকা খাবার এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ সঙ্গে রাখুন।
পাহাড়ে ওঠা-নামার সময় সতর্ক থাকুন এবং নির্দিষ্ট পথ অনুসরণ করুন।
পরিবেশ রক্ষা করুন; প্লাস্টিক বা বর্জ্য ফেলা থেকে বিরত থাকুন।


৫. সীতাকুণ্ড ইকো-পার্ক ও বোটানিক্যাল গার্ডেন


সীতাকুণ্ড ইকো-পার্ক ও বোটানিক্যাল গার্ডেন বাংলাদেশের অন্যতম প্রাকৃতিক ও শিক্ষামূলক ভ্রমণ গন্তব্য। চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলায় অবস্থিত এই পার্কটি জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পর্যটকদের বিনোদনের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই পার্কটি প্রায় ১৯৯৬ একর জমি জুড়ে বিস্তৃত, যার মধ্যে ১০০০ একর বোটানিক্যাল গার্ডেন এবং ৯৯৬ একর ইকো-পার্ক। 
 
 
সীতাকুণ্ড ইকো - পার্ক ও বোটানিক্যাল গার্ডেন
 
 
পার্কটিতে রয়েছে বিরল প্রজাতির গাছপালা, হাজারো রকমের ফুলের গাছ, কৃত্রিম লেক এবং নানা প্রজাতির জীববৈচিত্র্য। সুপ্তধারা ও সহস্রধারা নামে দুটি ঝর্ণা, ঝিরিপথ, পিকনিক স্পট, বিশ্রামের ছাউনি এবং ওয়াচ টাওয়ার রয়েছে, যা পর্যটকদের আকর্ষণ করে।
 
ঢাকা থেকে যাওয়ার উপায়-

বাসে:
স্টার্টিং পয়েন্ট: ঢাকার গাবতলী ও সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড।
গন্তব্য: সীতাকুণ্ড বাজার।
ভাড়া: নন-এসি: ৪২০ - ৪৮০ টাকা; এসি: ৮০০ - ১১০০ টাকা।
সময়: প্রায় ৫ - ৬ ঘণ্টা।
বাস সার্ভিস: এস আলম, হানিফ, সৌদিয়া, শ্যামলী, সেন্টমার্টিন, গ্রীন লাইন, সোহাগ, উইনিক পরিবহন।
বাসের কাউন্টার নাম্বার পেতে ভিজিট করুন - www.vromonlover.xyz

সীতাকুণ্ড বাজার থেকে পার্ক: সিএনজি বা অটোরিকশায় ১০ টাকা ভাড়ায় ইকো-পার্ক (দূরত্ব: ২ কিমি)।

ট্রেনে:
ট্রেন: ঢাকা কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ঢাকা মেইল ট্রেন।
সময়: রাত ১১ টায় ছেড়ে সকাল ৬-৭ টার মধ্যে সীতাকুণ্ড পৌঁছায়।
ভাড়া: ২৫০–১০৩৫ টাকা।
সীতাকুণ্ড স্টেশন থেকে পার্ক: অটোরিকশা বা সিএনজিতে ইকো-পার্ক (দূরত্ব: ২ কিমি)।
ট্রেনের সময়সূচী জানতে - zatriseba.com অথবা vromonlover.xyz ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।

পরামর্শ
প্রবেশ ফি: প্রতি ব্যক্তি ৫০ টাকা।
খাবার ও পানি: নিজের সাথে নিয়ে যাওয়া উত্তম।
পরিবেশ রক্ষা: পার্কের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতন থাকুন।


৬. খৈয়াছড়া ঝর্ণা


খৈয়াছড়া ঝর্ণা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই উপজেলায় অবস্থিত একটি মনোমুগ্ধকর জলপ্রপাত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পাহাড়ি পথ, এবং ঝিরিপথের সমন্বয়ে এটি অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় পর্যটকদের জন্য একটি আদর্শ গন্তব্য। 
 
 
খৈয়াছড়া ঝর্ণা
 
 
এই ঝর্ণাটি ৯টি ধাপবিশিষ্ট, যা বাংলাদেশের অন্যান্য ঝর্ণার তুলনায় অনন্য। ঝর্ণার চারপাশে রয়েছে সবুজ পাহাড়, ঝিরিপথ, এবং ঘন জঙ্গল, যা ভ্রমণকারীদের মুগ্ধ করে। খৈয়াছড়া ঝর্ণা ভ্রমণ একটি স্মরণীয় অভিজ্ঞতা হতে পারে, যেখানে আপনি প্রকৃতি ও অ্যাডভেঞ্চারের অপূর্ব সমন্বয় উপভোগ করতে পারবেন।
 
ঢাকা থেকে খৈয়াছড়া ঝর্ণা যাওয়ার উপায়-

বাসে:
রুট: ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী বাসে উঠে মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়া বাজারে নামতে হবে।
বাস সার্ভিস: এস আলম, হানিফ, শ্যামলী, সৌদিয়া, গ্রীন লাইন ইত্যাদি।
ভাড়া: নন-এসি: ৪২০ - ৪৮০ টাকা; এসি: ৮০০ - ১১০০ টাকা।
সময়: প্রায় ৫ - ৬ ঘণ্টা।
বড়তাকিয়া থেকে ঝর্ণা: খৈয়াছড়া আইডিয়াল স্কুলের সামনে নামার পর সিএনজি অটোরিকশায় ১০০ টাকায় ঝর্ণার প্রবেশমুখ পর্যন্ত যাওয়া যায়।
সকল বাসের কাউন্টার নাম্বার পাবেন- zatriseba.com অথবা vromonlover.xyz ওয়েবসাইটে।

ট্রেনে:
রুট: ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর ট্রেনে ফেনী স্টেশনে নামতে হবে।
ভাড়া: শ্রেণি ভেদে ২৬৫ - ৯০০ টাকা।
ফেনী থেকে ঝর্ণা: ফেনী স্টেশন থেকে রিকশা বা অটোরিকশায় মহিপাল বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে, সেখান থেকে লোকাল বাসে বড়তাকিয়া বাজারে পৌঁছাতে হবে। এরপর সিএনজি অটোরিকশায় ঝর্ণার প্রবেশমুখে যাওয়া যায়।
ট্রেনের সময়সূচী জানতে - zatriseba.com অথবা vromonlover.xyz ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।

ট্রেকিং ও ঝর্ণা দর্শন
পথ: ঝর্ণার প্রবেশমুখ থেকে প্রায় ১০ মিনিট হাঁটলে রেললাইন, এরপর আরও ১০ - ১৫ মিনিট হাঁটার পর ঝিরিপথ শুরু হয়।
সময়: ঝিরিপথ ধরে ঘন জঙ্গল ও পাহাড়ি পথ পেরিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টায় ঝর্ণায় পৌঁছানো যায়।
সতর্কতা: পথ কিছুটা দুর্গম ও পিচ্ছিল হতে পারে; ট্রেকিং স্যু পরা এবং সাবধানে চলাফেরা করা জরুরি।

খাবার ও থাকার ব্যবস্থা
খাবার: বড়তাকিয়া বাজার ও ঝর্ণার পথে স্থানীয় হোটেল ও রেস্টুরেন্টে খাবার পাওয়া যায়।
থাকা: মিরসরাই বা সীতাকুণ্ডে মাঝারি মানের হোটেল রয়েছে; তবে ভালো মানের থাকার জন্য চট্টগ্রাম শহরের হোটেলগুলো বিবেচনা করতে পারেন।

ভ্রমণ পরামর্শ
উপযুক্ত সময়: বর্ষাকাল ঝর্ণা দেখার জন্য উপযুক্ত, তবে মাঝ বর্ষায় না গিয়ে বর্ষা শুরুর আগে বা শেষ হওয়ার পর যাওয়া উত্তম।
সতর্কতা: পাহাড়ি পথ দুর্গম ও পিচ্ছিল হতে পারে; ট্রেকিং স্যু পরা এবং সাবধানে চলাফেরা করা জরুরি।
পরিবেশ রক্ষা: পরিবেশ রক্ষা করুন; প্লাস্টিক বা বর্জ্য ফেলা থেকে বিরত থাকুন।


৭. নাপিত্তাছড়া ট্রেইল


নাপিত্তাছড়া ট্রেইল বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই উপজেলায় অবস্থিত একটি মনোমুগ্ধকর ট্রেকিং গন্তব্য। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পাহাড়ি পথ, এবং ঝিরিপথের সমন্বয়ে এটি অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় পর্যটকদের জন্য একটি আদর্শ স্থান। চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার নয়দুয়ারী বাজারের পূর্ব পার্শ্বে।
 
 
নাপিত্তাছড়া ট্রেইল

 
এই ট্রেইলটি বিভিন্ন ঝর্ণা যেমন কুপিকাটাকুম, মিঠাছড়ি, বান্দরখুম ইত্যাদির সমন্বয়ে গঠিত। ঝিরিপথ ও পাহাড়ি পথ পেরিয়ে এসব ঝর্ণায় পৌঁছাতে হয়। ঝর্ণার চারপাশে রয়েছে সবুজ পাহাড়, ঝিরিপথ, এবং ঘন জঙ্গল, যা ভ্রমণকারীদের মুগ্ধ করে।

ঢাকা থেকে নাপিত্তাছড়া ট্রেইল যাওয়ার উপায়-
 
 
বাসে:
রুট: ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী বাসে উঠে মিরসরাইয়ের নয়দুয়ারী বাজারে নামতে হবে।
ভাড়া: নন-এসি: ৪৫০ - ৫০০ টাকা; এসি: ১০০০ - ১২০০ টাকা।
সময়: প্রায় ৫ - ৬ ঘণ্টা।
বাস সার্ভিস: এস আলম, হানিফ, শ্যামলী, সৌদিয়া, গ্রীন লাইন ইত্যাদি।
সকল বাসের কাউন্টার নাম্বার পাবেন- zatriseba.com অথবা vromonlover.xyz ওয়েবসাইটে।

ট্রেনে:
রুট: ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর ট্রেনে ফেনী স্টেশনে নামতে হবে।
ভাড়া: শ্রেণি ভেদে ২৬৫ - ৯০০ টাকা।
ফেনী থেকে নয়দুয়ারী বাজার: ফেনী স্টেশন থেকে রিকশা বা অটোরিকশায় মহিপাল বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে, সেখান থেকে লোকাল বাসে নয়দুয়ারী বাজারে পৌঁছাতে হবে।
ট্রেনের সময়সূচী জানতে - zatriseba.com অথবা vromonlover.xyz ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।

ট্রেকিং ও ঝর্ণা দর্শন
পথ: নয়দুয়ারী বাজার থেকে প্রায় ৪০ - ৫০ মিনিট হাঁটলে ট্রেইল শুরু হয়।
সময়: পুরো ট্রেইল হেঁটে দেখতে ৪ - ৫ ঘণ্টা লাগতে পারে, তবে এটি নির্ভর করে আপনি কতটা পাহাড়ি ও ঝিরিতে হাঁটতে অভ্যস্ত তার ওপর।
সতর্কতা: পথ কিছুটা দুর্গম ও পিচ্ছিল হতে পারে। ট্রেকিং সু পরা এবং সাবধানে চলাফেরা করা জরুরি।

খাবার ও থাকার ব্যবস্থা
খাবার: নয়দুয়ারী বাজার ও ট্রেইলের পথে স্থানীয় হোটেল ও রেস্টুরেন্টে খাবার পাওয়া যায়।
থাকা: মিরসরাইয়ে এখনো আবাসিক হোটেল বা রিসোর্ট গড়ে ওঠেনি। ভালো মানের থাকার জন্য চট্টগ্রাম শহরের হোটেলগুলো বিবেচনা করতে পারেন।

ভ্রমণ পরামর্শ
উপযুক্ত সময়: বর্ষাকাল ট্রেইল দেখার জন্য উপযুক্ত, তবে মাঝ বর্ষায় না গিয়ে বর্ষা শুরুর আগে বা শেষ হওয়ার পর যাওয়া উত্তম।
সতর্কতা: পাহাড়ি পথ দুর্গম ও পিচ্ছিল হতে পারে; ট্রেকিং স্যু পরা এবং সাবধানে চলাফেরা করা জরুরি।
পরিবেশ রক্ষা: পরিবেশ রক্ষা করুন; প্লাস্টিক বা বর্জ্য ফেলা থেকে বিরত থাকুন।

নাপিত্তাছড়া ট্রেইল ভ্রমণ একটি স্মরণীয় অভিজ্ঞতা হতে পারে, যেখানে আপনি প্রকৃতি ও অ্যাডভেঞ্চারের অপূর্ব সমন্বয় উপভোগ করতে পারবেন।


৮. রাঙ্গামাটি ও কাপ্তাই লেক


রাঙামাটি ও কাপ্তাই লেক বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের একটি অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের স্থান। সবুজ পাহাড়, নীল জলরাশি ও আদিবাসী সংস্কৃতির মেলবন্ধনে এটি পর্যটকদের জন্য একটি আদর্শ গন্তব্য। ১৯৬০-এর দশকে কর্ণফুলী নদীর উপর কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণের ফলে সৃষ্ট এই হ্রদটি ৬৮৮ বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। এর গড় গভীরতা প্রায় ১০০ ফুট, সর্বোচ্চ ১৭৫ ফুট পর্যন্ত। হ্রদের চারপাশে ছড়িয়ে থাকা ছোট ছোট দ্বীপ, সবুজ পাহাড় ও ঝর্ণা একে করে তুলেছে অনন্য।
 
 
রাঙ্গামাটি ও কাপ্তাই লেক

 
দর্শনীয় স্থানসমূহ
ঝুলন্ত সেতু (Hanging Bridge) -  রাঙামাটির প্রতীক হিসেবে পরিচিত ৩৩৫ ফুট দীর্ঘ এই সেতুটি কাপ্তাই লেকের উপর নির্মিত। 
শুভলং ঝর্ণা- কাপ্তাই লেকের নৌকা ভ্রমণের মাধ্যমে পৌঁছানো যায় এই ঝর্ণায়। বর্ষাকালে এর সৌন্দর্য আরও বেড়ে যায়।
রাজবন বিহার ও চক্রবাক রাজবাড়ি - বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য পবিত্র স্থান, যা স্থাপত্য ও আধ্যাত্মিকতার জন্য বিখ্যাত।
কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্ক - প্রায় ৫,৪৬৫ হেক্টর জুড়ে বিস্তৃত এই পার্কে রয়েছে বিভিন্ন বন্যপ্রাণী ও পাখির আবাসস্থল। এটি ট্রেকিং ও প্রকৃতি পর্যবেক্ষণের জন্য উপযুক্ত স্থান।
লাভ পয়েন্ট ও পলওয়েল পার্ক - কাপ্তাই লেকে এক দম্পতির স্মৃতিতে নির্মিত লাভ পয়েন্ট একটি প্রেমের স্মারক। পলওয়েল পার্কে রয়েছে পিকনিক স্পট, রেস্টুরেন্ট ও নৌকা ভ্রমণের ব্যবস্থা।

ঢাকা থেকে রাঙামাটি যাওয়ার উপায়-

বাসে:
রুট: ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী বাসে উঠে রাঙামাটির উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে হবে।
ভাড়া: নন-এসি: ৪৫০ - ৫০০ টাকা; এসি: ১০০০ - ১২০০ টাকা।
সময়: প্রায় ৭ - ৮ ঘণ্টা।
বাস সার্ভিস: এস আলম, হানিফ, শ্যামলী, সৌদিয়া, গ্রীন লাইন ইত্যাদি।
সকল বাসের কাউন্টার নাম্বার পাবেন- zatriseba.com অথবা vromonlover.xyz ওয়েবসাইটে।

ট্রেনে:
রুট: ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর ট্রেনে চট্টগ্রাম স্টেশনে নামতে হবে।
চট্টগ্রাম থেকে রাঙামাটি: চট্টগ্রাম থেকে রাঙামাটি যাওয়ার জন্য বাস বা মাইক্রোবাস পাওয়া যায়।
ট্রেনের সময়সূচী জানতে - zatriseba.com অথবা vromonlover.xyz ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।

কাপ্তাই লেকে নৌকা ভ্রমণ
কাপ্তাই লেকে নৌকা ভ্রমণ একটি অনন্য অভিজ্ঞতা। রিজার্ভ বাজার ঘাট থেকে নৌকা ভাড়া নিয়ে শুভলং ঝর্ণা, পেদা টিং টিং দ্বীপ, টুক টুক ইকো ভিলেজ ইত্যাদি স্থান ভ্রমণ করা যায়। নৌকা ভাড়ার পরিমাণ নৌকার আকার ও সময় অনুযায়ী ১,০০০ - ৬,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

থাকার ব্যবস্থা
রাঙামাটিতে বিভিন্ন মানের হোটেল, মোটেল ও রেস্ট হাউজ রয়েছে। বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন পরিচালিত হোটেল মোটেল ছাড়াও বেসরকারি রিসোর্ট ও কটেজ পাওয়া যায়। পলওয়েল পার্ক ও কাপ্তাই এলাকায়ও থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।

ভ্রমণের উপযুক্ত সময়
অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত সময় রাঙামাটি ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। এই সময়ে আবহাওয়া শুষ্ক ও মনোরম থাকে, যা নৌকা ভ্রমণ ও পাহাড়ি এলাকায় ঘোরাফেরার জন্য আদর্শ।


৯. ভাটিয়ারী


ভাটিয়ারী চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার একটি মনোরম পর্যটন স্থান, যা পাহাড়, লেক এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপূর্ব সমন্বয়ে গঠিত। ঢাকা থেকে সহজেই এখানে পৌঁছানো যায়, যা একদিনের ভ্রমণের জন্য আদর্শ। এখানে রয়েছে - ভাটিয়ারী লেক, সানসেট পয়েন্ট, ক্যাফে ২৪ পার্ক, ভাটিয়ারী গলফ ক্লাব ইত্যাদি।
 
 
ভাটিয়ারী ভ্রমন


ভাটিয়ারীর আকর্ষণীয় স্থানসমূহ-

ভাটিয়ারী লেক - সবুজ পাহাড়ে ঘেরা এই লেকটি প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য একটি স্বর্গ। এখানে প্যাডেল বোটিং, মাছ ধরা এবং সূর্যাস্ত উপভোগের সুযোগ রয়েছে।
সানসেট পয়েন্ট - ভাটিয়ারীর পাহাড়ের চূড়া থেকে সূর্যাস্ত দেখার অভিজ্ঞতা অসাধারণ। প্রতিদিন বিকেলে অনেক পর্যটক এখানে সূর্যাস্ত উপভোগ করতে আসেন।
ক্যাফে ২৪ পার্ক - বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত এই পার্কে রয়েছে বিভিন্ন রাইড, ওয়াটার পার্ক এবং রেস্তোরাঁ। 
ভাটিয়ারী গলফ ক্লাব - পাহাড়ের কোলে অবস্থিত এই গলফ ক্লাবটি প্রশান্তিপূর্ণ পরিবেশে গলফ খেলার সুযোগ প্রদান করে। এটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন।

ঢাকা থেকে ভাটিয়ারী যাওয়ার উপায়-

বাসে:
রুট: ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী বাসে উঠে ভাটিয়ারী শাহিদ মিনার মোড়ে নামতে হবে।
ভাড়া: নন-এসি: ৪৫০ - ৫০০ টাকা; এসি: ১০০০ - ১২০০ টাকা।
সময়: প্রায় ৫ - ৬ ঘণ্টা।
বাস সার্ভিস: এস আলম, হানিফ, শ্যামলী, সৌদিয়া, গ্রীন লাইন ইত্যাদি।
সকল বাসের কাউন্টার নাম্বার পাবেন- zatriseba.com অথবা vromonlover.xyz ওয়েবসাইটে।

ট্রেনে:
রুট: ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর ট্রেনে চট্টগ্রাম স্টেশনে নামতে হবে।
চট্টগ্রাম থেকে ভাটিয়ারী: চট্টগ্রাম থেকে ভাটিয়ারী যেতে সিএনজি বা লোকাল বাস ব্যবহার করা যায়।
ট্রেনের সময়সূচী জানতে - zatriseba.com অথবা vromonlover.xyz ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।

বিমানে:
রুট: ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট।
সময়: প্রায় ৪৫ মিনিট।
চট্টগ্রাম থেকে ভাটিয়ারী: বিমানবন্দর থেকে ট্যাক্সি বা সিএনজিতে ভাটিয়ারী পৌঁছানো যায়।

থাকার ব্যবস্থা
ভাটিয়ারীতে থাকার জন্য সরাসরি হোটেল না থাকলেও, চট্টগ্রাম শহরে বিভিন্ন মানের হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে ভাটিয়ারী যাতায়াত সহজ হওয়ায়, শহরে থাকা সুবিধাজনক।

ভ্রমণের উপযুক্ত সময়
নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত শীতকাল ভাটিয়ারী ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। এই সময়ে আবহাওয়া শুষ্ক ও মনোরম থাকে, যা নৌকা ভ্রমণ ও পাহাড়ি এলাকায় ঘোরাফেরার জন্য আদর্শ।

১০. জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম


চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে অবস্থিত নৃতাত্ত্বিক জাদুঘর বাংলাদেশের একমাত্র জাদুঘর যা দেশের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর জীবনধারা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করে। ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং ১৯৭৪ সালে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হওয়া এই জাদুঘরটি ১.২৫ একর জমির উপর নির্মিত। এখানে ৩৭টি জাতিগোষ্ঠীর প্রায় ২,৭০০টি নিদর্শন সংরক্ষিত রয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশের ২৯টি এবং ভারত, পাকিস্তান, কিরগিজস্তান ও অস্ট্রেলিয়ার কিছু জাতিগোষ্ঠীর নিদর্শন অন্তর্ভুক্ত।
 
 
জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম


জাদুঘরে চারটি গ্যালারি ও একটি হলরুম রয়েছে, যেখানে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর জীবনধারা, পোশাক, অলংকার, অস্ত্র, বাদ্যযন্ত্র, নৌকা, তাঁত, বাঁশের তৈরি সামগ্রী এবং ধর্মীয় উপকরণ প্রদর্শিত হয়েছে। একটি গ্যালারিতে ১৯৮৯ সালে ভেঙে ফেলা বার্লিন প্রাচীরের একটি অংশও সংরক্ষিত রয়েছে, যা বিশ্ব ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়কে স্মরণ করিয়ে দেয়।

ঢাকা থেকে আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম যাওয়ার উপায়-

বাসে:
রুট: ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী বাসে উঠে আগ্রাবাদে নামতে হবে।
ভাড়া: নন-এসি: ৪৫০ - ৫০০ টাকা; এসি: ১০০০ - ১২০০ টাকা।
সময়: প্রায় ৭ - ৮ ঘণ্টা।
বাস সার্ভিস: এস আলম, হানিফ, শ্যামলী, সৌদিয়া, গ্রীন লাইন ইত্যাদি।
সকল বাসের কাউন্টার নাম্বার পাবেন- zatriseba.com অথবা vromonlover.xyz ওয়েবসাইটে।

ট্রেনে:

রুট: ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর ট্রেনে চট্টগ্রাম স্টেশনে নামতে হবে।
চট্টগ্রাম থেকে আগ্রাবাদ: চট্টগ্রাম থেকে আগ্রাবাদ যেতে সিএনজি বা লোকাল বাস ব্যবহার করা যায়।
ট্রেনের সময়সূচী জানতে - zatriseba.com অথবা vromonlover ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।

বিমানে:
রুট: ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট।
সময়: প্রায় ৪৫ মিনিট।
চট্টগ্রাম থেকে আগ্রাবাদ: বিমানবন্দর থেকে ট্যাক্সি বা সিএনজিতে আগ্রাবাদ পৌঁছানো যায়।

নৃতাত্ত্বিক জাদুঘর বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ও ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। এটি শিক্ষার্থী, গবেষক ও সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য একটি অনন্য অভিজ্ঞতা প্রদান করে, যেখানে তারা দেশের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর জীবনধারা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারেন।


চট্টগ্রাম বিভাগের প্রতিটি ট্যুরিস্ট স্পটেই রয়েছে নিজস্ব এক বিশেষ সৌন্দর্য ও অভিজ্ঞতা। আপনি যদি প্রকৃতিকে ভালোবাসেন, পাহাড়ে হাঁটতে পছন্দ করেন বা সমুদ্রের ঢেউয়ে হারিয়ে যেতে চান। তাহলে এই অঞ্চল আপনার জন্য আদর্শ। ভ্রমণ মানেই শুধু ঘোরাঘুরি নয়, বরং জানার, শেখার ও উপভোগেরও এক দারুণ সুযোগ। তাই ভ্রমণ শুরু করার আগে এই গাইডটি চোখ বুলিয়ে নিন এবং প্ল্যান করে ফেলুন আপনার পরবর্তী ট্রিপ! পরবর্তী পোস্টে চট্টগ্রাম বিভাগের অন্যান্য ভ্রমন স্পট গুলো তুলে ধরবো সবার মাঝে। পোস্ট সম্পর্কে আপনার মতামত কমেন্টে জানাবেন। 
Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url